লাকসাম উপজেলা আয়তন: ১৩৫.৬১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১০´ থেকে ২৩°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০১´ থেকে ৯১°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও বরুড়া উপজেলা, দক্ষিণে নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে নাঙ্গলকোট ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, পশ্চিমে বরুড়া ও শাহরাস্তি উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৪০১৫৩; পুরুষ ১১৯৯৭৪, মহিলা ১২০১৭৯। মুসলিম ২২৫৮৬৬, হিন্দু ১২৩৪১, বৌদ্ধ ২৭, খ্রিস্টান ১৭৮৫ এবং অন্যান্য ১৩৪।

জলাশয় প্রধান নদী: ডাকাতিয়া, ছোট ফেনী। কার্জন খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন লাকসাম থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। বাংলাদেশের বৃহৎ পাঁচটি রেলওয়ে জংশনের একটি এখানে অবস্থিত।
তথ্যঃ

কুমিল্লা জেলা – লাকসাম উপজেলা আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তিন গম্বুজ বিশিষ্ট কাজীর মসজিদ, দশ গম্বুজ বিশিষ্ট নবাব বাড়ি মসজিদ, তিন গম্বুজ বিশিষ্ট আরফাননেসা মসজিদ (১৮৮০), পশ্চিমগাঁও নবাব বাড়ি (পশ্চিমগাঁও), তিন গম্বুজ বিশিষ্ট আফরাননেসা মসজিদ (১৮৬৯), অতুলচন্দ্র জমিদার বাড়ি, শ্রী শ্রী জগন্নাথবাড়ি দেবালয় ও জগন্নাথ দিঘি।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৬ এপ্রিল উপজেলার আজগরা বাজারে পাকবাহিনীর বোমা হামলায় প্রায় ২০০ জন মানুষ মারা যায়। তাছাড়াও মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে একাধিক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর বেশসংখ্যক হতাহতের ঘটনাসহ ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১২ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৪ (বেলতলা, লাকসাম রেলওয়ে জংশন, পশ্চিমগাঁও, লাকসাম বিড়ি ফ্যাক্টরি)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৯৬২, মন্দির ১৮, মাযার ৭, মঠ ১, বৌদ্ধবিহার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: আরফাননেসা মসজিদ, নবাব বাড়ি মসজিদ, গাজী সাহেবের মাযার, পানুয়া দরবার শরীফ, কালিয়াপুর পীর সাহেবের মাযার, রাজাপুর সৈয়দ শাহ্ ওলিউল্লাহ রাজাপুরী পীর সাহেবের মাযার, বরইগাঁও বৌদ্ধ বিহার।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.৬৭%; পুরুষ ৪৬.৩৩%, মহিলা ৪১.৪০%। কলেজ ৪, পালি কলেজ ১, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০৪, কমিউনিটি স্কুল ১, মাদ্রাসা ৬০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ, লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, লাকসাম গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়, হরিশ্চর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, বিএন উচ্চ বিদ্যালয়, দৌলতগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাজীমুড়া আলীয়া মাদ্রাসা।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: নয়া রবি; সাপ্তাহিক: লাকসাম বার্তা, জয়কণ্ঠ, সাপ্তাহিক লাকসাম, আলোর দিশারী; পাক্ষিক: নতুন আলো’ (অবলুপ্ত); সাপ্তাহিক: গ্রাম বাংলা, মাসিক: দিলদার (অবলুপ্ত)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৮, ক্লাব ২, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ১, সিনেমা হল ২।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪১.৪০%, অকৃষি শ্রমিক ৩.২৮%, শিল্প ১.১৭%, ব্যবসা ১৭.৭৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.১১%, চাকরি ১৪.৮৫%, নির্মাণ ১.৮২%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৬৫% এবং অন্যান্য ৯.৪৮%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৬.৬৭%, ভূমিহীন ৪৩.৩৩%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, গম, সরিষা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পাট।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেঁপে, লিচু, কামরাঙা।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪০২, হাঁস-মুরগি ২৮, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ৪, হ্যাচারি ৬।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৮৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৮০ কিমি; রেলপথ ৭২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, মটরলঞ্চ।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, তেলকল, সিগারেট ফ্যাক্টরি, বিড়ি ফ্যাক্টরি।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫, মেলা ২। চন্দনা বাজার, হরিশ্চর বাজার, আজগরা বাজার, নরপাটি বাজার, লাকসাম জংশন বাজার এবং কেমতলী বৈশাখী মেলা ও নূরপুর মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য বিড়ি, সিগারেট, তেল।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৩.০৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৮.৯২%, ট্যাপ ১.৭৫%, পুকুর ৩.৬৫% এবং অন্যান্য ৫.৬৮%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৯.২৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৯.৭৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১০.৯৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ৮, মা ও শিশুস্বাস্থ্য-কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ৪, পরিবার-পরিকল্পনা কেন্দ্র ১৪, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৮।

আরও দেখুনঃ

তিতাস উপজেলা | কুমিল্লা জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ
আদর্শ সদর উপজেলা | কুমিল্লা জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম বিভাগ – বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি বিভাগ
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা | কুমিল্লা জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ
–